বর্তমানে সেনসেটিভ ত্বক নারীদের মধ্যে একটি ব্যাপক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই আছেন যারা স্কিন কেয়ারের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করেই বিভিন্ন রাফ স্কিন প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, যার ফলে ত্বকে সাময়িক রিঅ্যাকশন হয়। তারা ভাবেন, তাদের ত্বক সেনসেটিভ। কিন্তু এই লেখাটি তাদের জন্য নয়। এই লেখা তাদের জন্য যাদের ত্বক নিয়মিত যত্ন নেওয়া সত্ত্বেও সামান্য উত্তেজক উপাদানে রিঅ্যাক্ট করে এবং তারা রূপচর্চায় বাধার সম্মুখীন হন। এতে তাদের মাঝে হতাশা ও অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। সঠিক তথ্য জানুন, সমস্যার সমাধান খুঁজে নিন—আর রূপচর্চায় ফিরে পান স্বস্তি!
সেনসেটিভ ত্বক কী?
সেনসেটিভ ত্বক আসলে একটি জটিল বিষয়, কারণ ডার্মাটোলজিস্ট, গবেষক এবং ভুক্ত ভোগীদের দৃষ্টিভঙ্গি একে অপরের থেকে ভিন্ন। তবে সমস্ত ভাবে বলা যায়, এটি এমন এক ধরণের ত্বক যা অল্প বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায়। হালকা চুলকানি, লালচে ভাব, র্যাশ বা এলার্জি ইত্যাদি এই ত্বকের সাধারণ উপসর্গ। আসলে ব্যাপারটা হলো, এই ত্বক একটু স্পর্শেই রেগে যায়!
সেনসেটিভ ত্বকের লক্ষণ গুলো কী?
সেনসেটিভ ত্বক যেহেতু একেক জনের একেক ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাই এর উপসর্গও ভিন্ন হতে পারে। কেউ জ্বালা ভাব অনুভব করেন, কেউ আবার লালচেভাব বা র্যাশ। তবে নিচে কিছু সাধারণ উপসর্গ তুলে ধরা হলো, যা অধিকাংশ ভুক্তভোগীর মধ্যে দেখা যায়।
সেনসেটিভ ত্বকের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে, যেমন—
- বিভিন্ন কসমেটিকস, বিশেষত যে গুলোতে সুগন্ধি থাকে, সে গুলোর প্রতি ত্বকের অতিসংবেদনশীলতা বা এলার্জি প্রতিক্রিয়া।
- সূর্যের আলো, বাতাস, বা মানসিক চাপের ফলে ত্বকে লালচে র্যাশ বা ছোট ছোট গোটা দেখা দেয়।
- ত্বকের যত্ন নেওয়ার সময় কিছু উপাদান র্যাশ বা এলার্জির সৃষ্টি করে।
- ত্বকের নিচে ভেঙে যাওয়া রক্তনালী চোখে পড়ে।
- ত্বকের গঠন খুবই পাতলা হয়, ফলে সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- মুখের পোর গুলো খুব সূক্ষ্ম এবং স্পর্শকাতর থাকে।
এই গুলা যদি তোর সাথে মিলে যায়, ভাই, বুঝে নে তোর স্কিনটা সেনসেটিভ!
সেনসেটিভ ত্বকের যত্ন কিভাবে নিতে হয়?
সেনসেটিভ ত্বক নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তা করেন ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যান না, যা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। মূলত, এই ধরনের ত্বকের সমস্যার পেছনে কোনো শারীরিক অসুস্থতা লুকিয়ে থাকতে পারে, যেমন হরমোনজনিত সমস্যা, লিভারের জটিলতা বা এলার্জিক কন্ডিশন। এ জন্য প্রথমেই একজন অভিজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসক আপনার ত্বকের সমস্যা বিশ্লেষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা দেবেন। ত্বকের প্রতিক্রিয়া কোন পরিস্থিতিতে হয়, কোন খাবার খেলে সমস্যা বাড়ে, এই তথ্য গুলো লিপি বদ্ধ রেখে চিকিৎসককে বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে।
যে সব প্রোডাক্ট বা উপাদানে আপনার ত্বকে প্রতিক্রিয়া হয়, চিকিৎসার সময় তা এড়িয়ে চলুন। এসময় ত্বকের উপযোগী পদযুক্ত বেছে নিতে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের বিভিন্ন স্কিন কেয়ার আইটেম ব্যবহার করে দেখতে পারেন। অতিরিক্ত সেনসেটিভ ত্বকের ক্ষেত্রে অনেক সময় আর্টিকেরিয়া (চুলকানি ও র্যাশ), ডার্মাটোগ্রাফিজম (চামড়ায় হালকা চাপে দাগ), বা রোসাসিয়া (লালচে চেহারা ও ব্রণর মতো উপসর্গ) দেখা যায়। এজন্য একজন দক্ষ ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া আবশ্যক।
সেনসেটিভ ত্বকের যত্নে যে গুলি চলবে
- প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস লেবু ও জল মিশিয়ে শরবত খেলে শরীর ডিটক্স হয় এবং ত্বক পরিষ্কার থাকতে সাহায্য করে।
- সূর্যরশ্মি সেনসেটিভ ত্বকের বড় শত্রু, তাই বাইরে যাবার সময় অবশ্যই এসপিএফ ৫০ সানস্ক্রীন ব্যবহার করতে হবে। তবে বেছে নিন নন-কমেডোজেনিক, প্যারাবেন ও ফ্র্যাগনেন্স ফ্রি ব্র্যান্ডের সানস্ক্রীন, যা সেনসেটিভ ত্বকের জন্য নিরাপদ।
- ত্বকের জন্য উপযুক্ত প্রোডাক্ট চিহ্নিত করতে বিভিন্ন আইটেম ট্রাই করুন, তবে সব সময় লক্ষ্য রাখুন যাতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে।
- প্রাকৃতিকভাবে ত্বক সুস্থ রাখতে হলে খাদ্যতালিকায় হলুদ, আদা ও দারুচিনি রাখুন।
- ত্বক পরিষ্কারের জন্য সপ্তাহে এক বা দুই দিন চিনি ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করুন এবং পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
সেনসেটিভ ত্বকের যত্নে যে ভুল করলে চলবে না
- অতিরিক্ত স্ক্রাব দিয়ে মুখ ঘষবেন না। খুব বেশি স্ক্রাব করলে ত্বকের উপরের প্রাকৃতিক সুরক্ষা নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি ৮ থেকে ১৪ দিন অন্তর একবার মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করাই যথেষ্ট।
- গরম জল দিয়ে মুখ ধোয়া থেকে বিরত থাকুন। গরম জল ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শুষে নিয়ে ত্বককে আরও শুষ্ক ও স্পর্শকাতর করে তোলে।
- পেট্রোলিয়াম-সমৃদ্ধ কোন প্রসাধনী ত্বকে ব্যবহার করবেন না। এ গুলো ত্বকে একধরনের প্রলেপ তৈরি করে, যার ফলে ত্বক শ্বাস নিতে পারে না, ক্ষত দ্রুত সারতে পারে না এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পায় না।
- এক সাথে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করা একেবারেই অনুচিত। তাছাড়া প্রাকৃতিক হলেও, ইচ্ছেমতো উপাদান যেমন-লেবু, বেসন, হলুদ বা টুথপেস্ট ইত্যাদি ত্বকে প্রয়োগ করা ঠিক নয়। এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
🔎 নতুন কোনো প্রোডাক্ট বা ফেস প্যাক ব্যবহারের আগে কী করবেন?
প্রথমে কানের পেছনে অল্প করে প্রোডাক্টটি লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করুন। যদি সেই স্থানে র্যাশ, চুলকানি, জ্বালা বা লালচে ভাব দেখা যায়, তাহলে সেই প্রোডাক্টটি ব্যবহার না করাই ভালো।
👉 মনে রাখবেন, সেনসেটিভ ত্বকে সতর্কতার সঙ্গে যত্ন নিলেই আপনি পেতে পারেন সুস্থ ও উজ্জ্বল ত্বক।
সেনসেটিভ ত্বকের অধিকারিণীরা, একটু মনোযোগ দিন আপনার ত্বকের যত্নে। সচেতন থাকুন, ভালোভাবে খেয়াল করুন আর নিজেকে রাখুন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর!
সুস্থ্য থাকুন নিজের ত্বকের যত্ন নিন।
বিঃদ্রঃ– উপরের তথ্য গুলো (সেনসেটিভ স্কিনের জন্য 5 টি কার্যকর হেলথ Hack) কেবলমাত্র ত্বক কে ভালো রাখার উদ্দেশ্য। rupcharcha.in শুধুমাত্র বিভিন্ন ন্যাচারাল স্কিন কেয়ার এর খবর ইত্যাদি বিষয়ে আপডেট দেওয়ার জন্যই তৈরি করা। এটা কোন সংস্থা নয় এবং পরিচালনা করে না। এটা সমগ্র ইন্টারনেট জুড়ে খবর সংগ্রহ করে প্রকাশিত করে। rupcharcha.in সর্বদা চেষ্টা করে নির্ভুল আপডেট প্রকাশ করার তবুও আমাদের অবচেতন মনে যদি কোন ভুল হয়ে যায় তাহলে ভুলের জন্য আমরা দায়ী নই।
পাঠকদের অনুরোধ করা হচ্ছে আপনারা অতি অবশ্যই নোটিফিকেশন নিজে থেকে ভালো করে যাচাই করবেন, দেখবেন, বুঝবেন তবেই নিজের দায়িত্ব করবেন।
বিঃদ্রঃ: এই আর্টিকেলের (5 Effective Health Hacks for Sensitive Skin) প্রোডাক্ট লিঙ্ক গুলি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক হতে পারে। আপনার প্রয়োজনে প্রোডাক্ট নির্বাচনে সতর্ক হোন।
গুরুত্বপূর্ণ লিংকগুলি (Important Links)
Rupcharcha Medium Website | Click Here |
Rupcharcha Twitter Page | Click Here |
Rupcharcha Facebook Page | Click Here |
Rupcharcha LiveJournal Page | Click Here |
Rupcharcha Quora Page | Click Here |
Rupcharcha Pinterest Page | Click Here |
Rupcharcha Reddit Page | Click Here |