ব্ল্যাকহেডস একটি বহুল প্রচলিত ত্বকের সমস্যা, যা সাধারণত টিনএজ থেকে শুরু হয়ে বয়স বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে যায় যদি ত্বকের সঠিক যত্ন না নেওয়া হয়। বিশেষত তেলতেলে ত্বকধারীরা এই সমস্যার সম্মুখীন বেশি হন। কিন্তু ব্ল্যাকহেডস কি আদৌ পুরোপুরি দূর করা সম্ভব? এই সমস্যার সমাধান কি চিরস্থায়ী হতে পারে? আজকের ফিচারে এই কনফিউশন দূর করার চেষ্টা করা হবে।
ব্ল্যাকহেডস কেন হয়?
মানুষের ত্বকে রয়েছে পোরস বা ছোট ছোট লোমকূপ যা সেবাম এবং ঘাম নিঃসরণ করে। এই সেবাম যখন বাইরের ধুলা-ময়লা ও মৃত কোষের সাথে মিশে আঠালো পদার্থে পরিণত হয়, তখন বাতাসের সংস্পর্শে আসায় এটি অক্সিডাইজড হয়ে কালো রঙ ধারণ করে, যা আমরা ব্ল্যাকহেডস হিসেবে চিনি। একে ওপেন কমেডোনসও বলা হয়ে থাকে। তৈলাক্ত ত্বকে সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড বেশি সক্রিয় থাকায় ব্ল্যাকহেডস হওয়ার প্রবণতাও বেশি।
ব্ল্যাকহেডস চিরতরে দূর করা কি সম্ভব?
আপনি যদি অতিরিক্ত সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, তবে ব্ল্যাকহেডস প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিছু নির্দিষ্ট সক্রিয় উপাদান এই সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখে। আসুন জেনে নেই ব্ল্যাকহেডস সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণ করতে কী কী করা যেতে পারে।
ব্ল্যাকহেডস সমস্যার সমাধানে কিছু কার্যকর উপায়:
১. স্যালিসাইলিক অ্যাসিড যুক্ত ক্লেনজার ব্যবহার করা
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ব্ল্যাকহেডস দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি এক্সেস সেবাম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ব্ল্যাকহেডস-হোয়াইটহেডস প্রতিরোধ করতে পারে। ডেইলি ব্যবহারের পরিবর্তে সপ্তাহে তিনদিন ব্যবহার করাই উত্তম।
২. কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা
AHA এবং BHA গ্রুপের এক্সফোলিয়েটর ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সহায়ক। BHA লিপিড সলিউবল হওয়ায় এটি পোরসকে গভীর থেকে পরিষ্কার করে। এটি ব্ল্যাকহেডস দূর করতে এবং ত্বকের স্বচ্ছতা আনতে সহায়ক।
৩. রেটিনল ব্যবহারে সহায়তা
যারা স্কিনকেয়ারে অগ্রসর পর্যায়ে আছেন, তারা রেটিনল বা রেটিনয়েড যুক্ত পণ্য ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্লকড পোরস খুলতে সহায়ক এবং প্রাথমিকভাবে ০.০১% রেটিনল ব্যবহার করলে নিরাপদ হয়।
৪. ক্লে মাস্ক প্রয়োগ করা
এক্সেস অয়েল অপসারণ এবং স্কিনের ইমপিওরিটিস দূর করতে ক্লে মাস্ক একটি কার্যকরী সমাধান। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে ত্বকের অয়েল কন্ট্রোল করা যায় এবং ব্ল্যাকহেডস সমস্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
৫. Benzoyl Peroxide ব্যবহার
Benzoyl peroxide সাধারণত একনে সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করতেও কার্যকর।
সতর্কতা:
১) প্রতিদিন এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করা উচিত নয়। BHA ও রেটিনল একসঙ্গে না ব্যবহার করে আলটানেট করা উচিত।
২) স্যালিসাইলিক অ্যাসিড যুক্ত ক্লেনজারের সাথে একই উপাদানের অন্যান্য প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো।
৩) দিনের বেলা সানস্ক্রিন ব্যবহার অবশ্যই করতে হবে এবং প্রতি ২-৩ ঘন্টা পর পুনরায় অ্যাপ্লাই করতে হবে।
৪) নতুন পণ্য ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করা অত্যাবশ্যক।
৫) ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সরাসরি লেবুর রস ও বেকিং সোডা ব্যবহার করা উচিত নয়।
৬) নোস পোর স্ট্রিপ নিয়মিত ব্যবহার না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট:
যারা দীর্ঘকালীনভাবে ব্ল্যাকহেডস সমস্যায় ভুগছেন, তারা ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শে Extraction, Chemical peeling, Microdermabrasion এর মতো ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন।
আশা করছি, আজকের আলোচনায় ব্ল্যাকহেডস সমস্যা নিয়ে আপনার সকল কনফিউশন দূর হয়েছে।
সুস্থ্য থাকুন নিজের ত্বকের যত্ন নিন।
আরো পড়ুন : তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন | Skin care for oily skin
বিঃদ্রঃ– উপরের তথ্যগুলো () কেবলমাত্র ত্বক কে ভালো রাখার উদ্দেশ্য। rupcharcha.in শুধুমাত্র বিভিন্ন ন্যাচারাল স্কিন কেয়ার এর খবর ইত্যাদি বিষয়ে আপডেট দেওয়ার জন্যই তৈরি করা। এটা কোন সংস্থা নয় এবং পরিচালনা করে না। এটা সমগ্র ইন্টারনেট জুড়ে খবর সংগ্রহ করে প্রকাশিত করে। rupcharcha.in সর্বদা চেষ্টা করে নির্ভুল আপডেট প্রকাশ করার তবুও আমাদের অবচেতন মনে যদি কোন ভুল হয়ে যায় তাহলে ভুলের জন্য আমরা দায়ী নই।
গুরুত্বপূর্ণ লিংকগুলি (Important Links)
Medium Website | Click Here |
Rupcharcha Twitter Page | Click Here |
Rupcharcha Facebook Page | Click Here |